বাংলাদেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোশাক শিল্পের অবদান সম্পর্কে জানুনবাংলাদেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা নিয়ে আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব, যা ছাত্রছাত্রীদের জীবনের অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আর্টিকেলটিতে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় ও উপকারী তথ্য তুলে ধরা হবে।
আপনি হয়তো ভাবছেন কেন পড়তে যাব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ? সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন কারণ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানুষ দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষক, কম খরচে মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং বড় সুযোগ-সুবিধা। কিন্তু এত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিড়ে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়টি বেছে নেওয়া সহজ নয়। আমরা এখানে তুলে ধরেছি সবচেয়ে জনপ্রিয় সম্মানিত বাংলাদেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা।
পেইজ সূচিপত্রঃ বাংলাদেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা সম্পর্কে জেনে আপনার স্বপ্ন পূরণ করুন।
- বাংলাদেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা।
- সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কি?
- বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো দিক।
- বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনটি ?
- বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য কি কি যোগ্যতা লাগে ?
- বর্তমানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কত ?
- বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতিবাচক দিক।
- সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি।
- লেখকের শেষ বক্তব্য।
বাংলাদেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা
বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কদর সর্বোচ্চ যদি আপনি এদেশে উচ্চ শিক্ষা নিতে চান। কারণ এগুলোতে পড়াশোনার মান যেমন ভালো, পড়ার খরচও তেমনি তুলনামূলকভাবে অনেক কম। প্রতিবছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুযোগ। কিন্তু আপনি জানেন কি, বাংলাদেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনগুলো ?
আজকে আপনাদের সাথে বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে অতীব প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো শেয়ার করবো।
চলুন তাহলে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক। নিচে বাংলাদেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেয়া হলোঃ
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
- বাংলাদেশ প্রোকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
- জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়।
- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
- বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
- বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস।
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
যে তালিকাটি তুলে ধরা হয়েছে সেটি শিক্ষার মান, গবেষণা, ছাত্র পরিসর এবং সার্বিক পরিচিতির ভিত্তিতে তৈরি।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কি?
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বলতে সেইসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বুঝায় যা প্রধানত সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারি নীতিমালা ও আইনের অধীনে পরিচালিত হয় এবং এদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বা তদারকি করা হয়। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নামেও অভিহিত করা হয়।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বৈশিষ্ট্য হলোঃ
- সরকারি অর্থায়নঃ এদের প্রধান আর্থিক উৎস হলো সরকার। সরকার বার্ষিক বাজে করার ব্যাপারে এবং অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
- সরকারি নিয়ন্ত্রণঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণ, প্রশাসন এবং একাডেমিক কার্যক্রম সাধারণত সরকারি নিয়ম-কানুন ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত।
- স্বায়ত্তশাসনঃ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদিও সরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকে অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কিছু খেতে সাহিত্য শাসন ভোগ করে থাকে বিশেষ করে একাডেমির বিষয়ে। তবে এই স্বায়ত্তশাসনের মাত্রা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন হতে পারে।
- শিক্ষার তুলনামূলক খরচ কমঃ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত শিক্ষার খরচ অনেক কম থাকে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগকে আরও সহজলভ্য করে তোলে।
- শিক্ষার গুণগতমানঃ প্রায় সব দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের দিক থেকে উন্নতমানের হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
- ভর্তির প্রতিযোগিতাঃ শিক্ষার খরচ কম এবং গুণগত মান ভালো হওয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা দেখা যায়।
বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো দিক
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। কেন জানেন ? কারণ এখানে শুধু ভালো শিক্ষা নয়, সাথে মেলে ভবিষ্যতের জন্য দৃঢ় ভিত্তি। একবার ভর্তি হতে পারলে একটা নিজস্ব পরিচয় তৈরি হয়-"আমি একটা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট" এই গর্বটাই বলে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব।তবে গর্বের জায়গাটা শুধু নয়, এর পিছনে রয়েছে আরও অনেক বাস্তব কারণ।
চলুন জেনে নিই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো কেন এত জনপ্রিয় এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে কি কি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- অত্যন্ত সাশ্রয়ী ব্যয়ঃ চাকরি বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে বড় সুবিধা হল খুব অল্প খরচে মানসম্পন্ন শিক্ষা পাওয়া যায়।ভর্তি ফি, সেমিস্টার ফি, টিউশন ফি- সবই সাধারণ মানুষের নাগালে। অনেক সময় পুরো কোর্সই ১০ হাজার টাকার নিচে শেষ হয়ে যায়।
- দেশসেরা শিক্ষকদের কাছ থেকে শেখার সুযোগঃ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক হিসেবে থাকেন দেশের সেরা মেধাবীরা, যারা দেশ-বিদেশে পড়াশুনা করে আসছেন, অনেকেই পিএইচডি করেছেন। ফলে আন্তর্জাতিক মানের ক্লাস ও গবেষণার সুযোগ পান।
- বিস্তৃত বিষয়ভিত্তিক সুযোগঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে প্রায় সব ধরণের বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ থাকে। যেমন- মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসা, আইন, চারুকলা, সাংবাদিকতা এমনকি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন পর্যন্ত বিষয় নিয়ে পড়া যায়। যার ফলে শিক্ষার্থী নিজের আগের মত বিষয় বেছে নিতে পারে।
- চাকরির বাজারে বাড়তি গুরুত্বঃ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার মানে একটা আলাদা কদর। চাকরি দাতারা অনেক সময় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট কে বেশি গুরুত্ব দেন, বিশেষ করে সরকারি চাকরি বা ব্যাংকিং ক্ষেত্রে।
- গবেষণার সুযোগ ও স্কলারশিপঃ প্রতিটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকে গবেষণার জন্য আলাদা ফান্ড, ল্যাব এবং শিক্ষক গাইড। অনেক ক্ষেত্রে দেশের বাইরেও স্কলারশিপের সুযোগ মিলে, যেমন- ডিএএডি, ফুল ব্রাইট, এরাশমাস ইত্যাদি।
- প্রশস্ত ক্যাম্পাস ও লাইব্রেরী সুবিধাঃ রাজশাহী চট্টগ্রাম বাজারনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ক্যাম্পাসে যে প্রশান্তি মিলে, সেটা শহরের কোলাহলে পাওয়া যায় না। পাশাপাশি লাইব্রেরী ও একাডেমিক রিসোর্স অনেক বেশি সমৃদ্ধ।
- সংস্কৃতি, রাজনীতি ও নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগঃ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো শুধু পড়াশুনার জায়গা নয় এখানে ছাত্ররা নাটক, সংগীত, বিতর্ক, রাজনীতি এমনকি সাংবাদিকতায়ও জড়িয়ে থাকে। এতে তাদের নেতৃত্ব যোগাযোগ এবং বাস্তব জীবন দক্ষতা বাড়ে।
- শক্তিশালী অ্যালামনাই নেটওয়ার্কঃ ঢাকা রাজশাহী বুয়েট এর মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাবেক ছাত্রছাত্রীরা দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে আছেন। যারা পরবর্তীতে তাদের বন্ধু বান্ধবও পরিচিতদের চাকরি, স্কলারশিপ বা পরামর্শে সাহায্য করতে পারেন। এটা একটা অমূল্য রিসোর্স।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া মানে এটা একটা ডিগ্রী নয়, এটা জীবনের একটা বড় অভিজ্ঞতা। শিক্ষা, মূল্যবোধ নেতৃত্ব সবকিছু এখান থেকেই গড়ে ওঠে। যদিও ভর্তি হওয়া কঠিন কিন্তু একবার সুযোগ পেলে তা জীবন বদলে দিতে পারে। তাই আজকেই ঠিক করুন আমাদের দেয়া বাংলাদেশের সেরা ১০ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর আপনি কোনটার জন্য প্রস্তুতি নিবেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনটি ?
যত বড় বিশ্ববিদ্যালয়, তত বড় সুযোগ। অনেকে জানতে চান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনটি ? শুধু আয়তনে নয় বরং শিক্ষার্থী সংখ্যা, বিভাগ ক্যাম্পাস ও অবকাঠামো বিবেচনায় কোনটি শীর্ষে ? বাংলাদেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান অতুলনীয়। আসুন জানি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ কিছু দিক যা এটিকে সবচেয়ে বড় ও অন্যতম জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত করেছে।
- প্রতিষ্ঠায় ঐতিহ্যঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ১৯২১ সালে শুরু হলেও এর প্রভাব বাংলাদেশে আরো অনেক আগে থেকেই অনুভূত হতে শুরু করে। এটি শুধু শিক্ষার প্রতিষ্ঠানই নয়,বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভাষা আন্দোলন এবং সমাজ সংস্কারের কেন্দ্রস্থল হিসেবে কাজ করেছে।
- বিশাল ক্যাম্পাস ও শিক্ষার্থীর সংখ্যাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বিশাল এবং সারা বছরই এখানে হাজারো শিক্ষার্থী ও শিক্ষক পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায়ই ৪০ হাজার প্লাস শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এই ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা মিলিয়ে গড়ে উঠেছে একটি প্রাণবন্ত ও সৃজনশীল পরিবেশ যেখানে নতুন কিছু শেখার সুযোগ মিলে।
- উচ্চমানের শিক্ষা ও গবেষণাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস শুধু একাডেমিক দিক দিয়ে সমৃদ্ধ নয়, বরং সাংস্কৃতিক দিক থেকে ওই দেশে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এখানে নিয়মিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, বিতর্ক এবং কবিতা পাঠের মতো নানা আয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন উন্নয়নকল্পে সুদৃঢ় ভূমিকা পালন করে থাকে।
- অবকাঠামো ও অসুবিধাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রয়েছে আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, গবেষণাগার, লাইব্রেরি, কম্পিউটার সেন্টার, ইন্টারনেট সুবিধা এবং বিভিন্ন স্পোর্টস ফ্যাসিলিটি। ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলেই আপনি দেখবেন এমন এক পরিবেশ যেখানে শিক্ষার্থীরা শুধু শিক্ষা নয় সামাজিকতা, সৃজনশীলতা এবং নিত্যনতুন ধারণার বিকাশ ঘটাচ্ছে।
- আন্তর্জাতিক পরিচিতিঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক মানিক শিক্ষা গবেষণা বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে উদ্ভাবনী কাজ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ প্রদান, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম এবং গবেষণায় সহযোগিতা দেয়।
বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটি নতুন মাথায় নিয়ে এসেছে। দেশের প্রতিটি কোন থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করতে আসে এবং ভবিষ্যতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত হয়।
বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য কি কি যোগ্যতা লাগে ?
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন অনেকের। তবে এই সপ্তাহ বাস্তবে রূপ নিতে হলে শুধু ইচ্ছা থাকলেই হবে না, থাকতে হবে সঠিক যোগ্যতা আর কিছু প্রস্তুতি। অনেকেই মনে করেন এসএসসি আর এইচ এস সি তে ভালো ফল করলেই ভর্তি হয়ে যাওয়া যাবে, কিন্তু ব্যাপারটা একটু ভিন্ন। চলুন জেনে নিয়ে আসলে কি কি লাগে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে।
যোগ্যতার তালিকাঃ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য আপনি যেসব যোগ্যতা থাকতে হবে তার একটি তালিকা নিজে তুলে ধরা হলো-
১. এসএসসি ও এইচএসসিতে নির্দিষ্ট জিপিএ থাকতে হয়।
- বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত নূন্যতম ৩.৫০-৪.০০জিপিএ দরকার হয়।
২. ভিন্ন ইউনিটে ভিন্ন যোগ্যতা।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত এ,বি,সি, ইউনিট থাকে। যেমন-
- এ ইউনিট- বিজ্ঞান বিভাগ।
- বি ইউনিট -মানবিক বিভাগ।
- সি ইউনিট - ব্যবসায়ী শিক্ষা।
প্রত্যেক ইউনিটের জন্য ভিন্ন ভিন্ন যোগ্যতা প্রস্তুতির দরকার হয়।
৩. ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয়
- বর্তমানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা চালু হয়েছে (বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে)। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্ববিদ্যালয় এখনো আলাদা ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে।
৪. নির্দিষ্ট বিষয়ে ভালো নাম্বার লাগতে পারে
- কিছু বিভাগে পড়তে চাইলে ওই বিষয়ে এসএসসি ও এইচ এস সি তে ভালো ফলাফল থাকতে হয়। যেমন- পদার্থবিদ্যায় ভর্তি হতে চাইলে গনিত ও পদার্থবিজ্ঞানে ভালো গ্রেড থাকা দরকার। আবার ইংরেজি বিভাগে গেলে ইংরেজিতে ভালো নাম্বার গুরুত্বপূর্ণ।
যারা আগে থেকেই লক্ষ্য স্থির করে এগোই, তারাই সফল হয়। যদি আপনি একদিন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট দিয়ে ঢুকতে চান তাহলে আজ থেকে নিজের লক্ষ্য ঠিক করুন। বাংলাদেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালযয়ের তালিকা দেখে নিয়ে পড়াশোনা শুরু করুন আর আত্মবিশ্বাস রাখুন আপনিও পারবেন।
বর্তমানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কত ?
- ঢাকা বিভাগঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
- চট্টগ্রাম বিভাগঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
- রাজশাহী বিভাগঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট।
- সিলেট বিভাগঃ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
- বরিশাল ময়মনসিংহ কক্সবাজার কুড়িগ্রাম ইত্যাদি জায়গা ও নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়েছে।
বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতিবাচক দিক।
- সেশনজটঃ অনেক সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা, শিক্ষক ধর্মঘট কিংবা প্রশাসনিক জটিলতার কারণে সেমিস্টার গুলো সময় মত শেষ হয় না। ফলে পুরো কোর্স শেষ করতে অনেক সময় অতিরিক্ত বছর লেগে যায়।
- আবাসন সংকটঃ বেশিরভাগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই আবাসনের ব্যবস্থা প্রয়োজনের তুলনায় কম।বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোতে জায়গা পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও পরিচয়ের ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ হয়, যা নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যা তৈরি করে।
- রাজনীতি ও সংঘর্ষঃ ছাত্র রাজনীতি অনেক সময় ইতিবাচক ভূমিকা রাখলেও, মাঝে মাঝে তা হানাহানি ও সহিংসতায় রূপ নেয়। এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা এমন কি পুরো শিক্ষাজীবনেই পড়তে পারে।
- পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাবঃ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যাপ্ত ল্যাব, আধুনিক ক্লাসরুম, লাইব্রেরি বা প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা নেই। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের নিজ উদ্যোগে আলাদা ব্যবস্থা নিতে হয়।
- প্রশাসনিক জটিলতাঃ ফলাফল, ট্রান্সক্রিপ্ট, সার্টিফিকেট সংগ্রহে দপ্তরগুলোতে নানা ধরনের দেরি বা হয়রানি শিকার হতে হয় আপনাকে। নিয়ম কানুন জটিল হয় ছাত্রদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি।
- ক্যাম্পাস লাইফ কেমন হয়ঃ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস মানেই শুধু ক্লাস আর পরীক্ষা নয়। এখানে আপনি পাবেন রাজনীতি, সংস্কৃতি কার্যক্রম, বিতর্ক, নাটক, লেখালেখি ইত্যাদি নানা রকম সুযোগ। এছাড়াও আপনি শেখার সুযোগ পাবেন আত্মনির্ভরতা, যোগাযোগ দক্ষতা, নেতৃত্ব যা ভবিষ্যতের জন্য খুবই দরকার।
- আবাসনের অবস্থা কেমনঃ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকার ব্যবস্থা থাকেনা। সিট পেতে সময় লাগতে পারে। অনেককেই শুরুর দিকে মেসে বা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হতে পারে। তাই আগে থেকেই আপনার মানসিক প্রস্তুতি থাকা ভালো।
- ক্লাশ-পরীক্ষার নিয়ম কেমনঃ অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট এখনো একটা চ্যালেঞ্জ। নিয়মিত ক্লাস করা, প্রেজেন্টেশন দেওয়া, এসাইনমেন্ট সময় মত জমা দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবেঃ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অনেক বেশি স্বাধীন। তুমি সেই স্বাধীনতার সঙ্গে আপনার উপর কিছু দায়িত্ব আসে। সময়ের সঠিক ব্যবহার, নিজের প্রতি দায়িত্ববোধ, পড়াশোনার প্রতি সচেতনতা- সবই নিজের উপর নির্ভর করে।
- গ্রুপ স্টাডি ও সহপাঠীদের সহযোগীতা দরকারঃ এখানে একা একা পড়াশোনার পাশাপাশি গ্রুপ স্টাডির গুরুত্ব অনেক বেশি। সহপাঠীদের সাহায্যে অনেক কিছু শিখা যায়, যার ফলে অনেক জটিল বিষয়ও আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে।তাই সম্পর্ক তৈরি ও টিমওয়ার্ক শিখার জায়গাও এটা।
ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url