OrdinaryITPostAd

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম জানুন

বিকাশ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম জানুন অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম সম্পর্কিত সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আপনার যদি অগ্রণী ব্যাংকে একটি একাউন্ট থাকে, সেখান থেকে যদি আপনার বিকাশ একাউন্টে টাকা আনতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।
অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম জানুন
আজকের আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম , চার্জ, লিমিট, সুবিধা-অসুবিধা, সতর্কতা ইত্যাদি সম্পর্কে। তাই যারা অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা লেনদেন করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আজকের কনটেন্টটি অনেক উপকারী হবে, কেননা আজকে এ বিষয়ে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

পেইজ সূচিপত্রঃ অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম জানুন আর ঘরে বসে ব্যাংকিং সেবা উপভোগ করুন।

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম 

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা নিয়ম অবশ্যই আপনার জানা উচিত। ব্যাংক থেকে বিকাশে বা বিকাশ থেকে যেকোনো ব্যাংক একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করার মাধ্যমে মানুষের ব্যাংকিং লেনদেন অনেক সহজ ও নিরাপদ হয়ে উঠেছে। কেননা কিছু সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করলেই খুব সহজভাবেই আপনি আপনার অগ্রণী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে বিকাশ যেকোনো বিকাশ একাউন্টে টাকা পাঠাতে পারবেন।
অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম
তাই আপনার সুবিধার্থে অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম অতি সহজে ও সুন্দরভাবে নিচে তুলে ধরা হলো-

১. প্রথম ধাপঃ 

বেনিফিশিয়ারি যোগ করাঃ প্রথমে আপনাকে বেনিফিশিয়ারি যোগ করতে হবে। কিভাবে করবেন সেটা নিচে দেয়া হলো-
  • আপনার অগ্রণী ব্যাংক- এর ইন্টারনেট ব্যাংকিং একাউন্টে মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েবের মাধ্যমে লগইন করুন।
  • 'ম্যানেজ বেনিফিশিয়ারি' অপশনে ক্লিক করুন।
  • নির্দেশিত ধাপগুলো অনুসরণ করে, বেনিফিশিয়ারি হিসেবে আপনার বিকাশ একাউন্ট নাম্বার যোগ করুন।এই ধাপে আপনার বিকাশ একাউন্ট নাম্বার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন- আপনার নাম, মোবাইল নাম্বার ইত্যাদি চাওয়া হতে পারে।
  • বেনিফিশিয়ারি যোগ করার পর ব্যাংক কর্তৃক একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) আপনার রেজিস্ট্রার্ড মোবাইল নাম্বারে পাঠানো হতে পারে। ওটিপি প্রবেশ করে বেনিফিশিয়ারি যোগ করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করুন।
২. দ্বিতীয় ধাপঃ 

ফান্ড ট্রান্সফারঃ ফান্ড ট্রান্সফারের নিয়ম  নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো-
  • আপনার অগ্রণী ব্যাংক- এর ইন্টারনেট ব্যাংকিং মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েবের মাধ্যমে 'ফান্ড ট্রান্সফার' অপশনে যান। 
  • ফান্ড- এর উৎস হিসেবে আপনার অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট নাম্বারটি সিলেক্ট করুন।
  • ট্রান্সফার অপশন হিসেবে বিকাশ সিলেক্ট করুন।
  • বেনিফিশিয়ারি লিস্ট থেকে আপনার যোগ করা বিকাশ একাউন্ট নাম্বারটি সিলেক্ট করুন।
  • আপনি যে পরিমাণ টাকা বিকাশ একাউন্টে পাঠাতে চান, টাকার সেই পরিমাণটা লিখুন।
  • রেফারেন্স অপশনে রেফারেন্স হিসেবে কোনো নোটিশ বা কথা যোগ করতে পারেন (ঐচ্ছিক)।
  • এবার ব্যাংকের লেনদেন পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনার পিন নাম্বার বা অন্যান্য সিকিউরিটি কোড ব্যবহার করে সফলভাবে ফান্ড ট্রান্সফার সম্পন্ন করুন।
এভাবে, অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম জেনে প্রত্যেকটা ধাপ সিরিয়ালি অনুসরণ করে সহজেই টাকা লেনদেন করতে পারবেন। আর সহজ ও দ্রুত লেনদেনের জন্য অগ্রণী ব্যাংক ও বিকাশ উভয়ের মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করা সুবিধাজনক।

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনবেন কেন

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনতে পারবেন ঘরে বসেই, নিরাপদ ও সহজ পদ্ধতিতে। এছাড়াও অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার যথেষ্ট কারণ ও সুবিধা আছে। এগুলোর মধ্যে প্রধান কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-
  • সহজ লেনদেনঃ অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনা খুব সহজ এবং দ্রুত একটি প্রক্রিয়া। ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই যেকোনো সময় এই কাজটি আপনি করতে পারবেন। ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়ানো বা অন্য কোনো জটিলতা ছাড়াই টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন এই পদ্ধতিতে। 
  • সময় সাশ্রয়ঃ এই পদ্ধতিতে টাকা পাঠানোর জন্য গ্রহকের ফিজিক্যালি ব্যাংক যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। ফলে আপনার মূল্যবান সময় সাশ্রয় হয়।
  • যেকোনো সময় লেনদেনঃ দিন বা রাতে যেকোনো সময় এমনকি ছুটির দিনেও আপনি বিকাশে টাকা আনতে পারবেন। এটি একটি ২৪/৭ পরিষেবা। 
  • নিরাপত্তাঃ অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা পাঠালে আপনার অনলাইন লেনদেন ব্যবস্থা সাধারণত সুরক্ষিত থাকে। অগ্রণী ব্যাংক এবং বিকাশ উভয়েই গ্রাহকের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। ওটিপি(অন টাইম পাসওয়ার্ড) ব্যবহারের হয় মাধ্যমে লেনদেন আরো সিকিওর হয়।
  • বিকাশের সুবিধাঃ অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা এনে গ্রাহক বিভিন্ন ধরনের সুবিধা ও উপভোগ করতে পারেন যেমন-মোবাইল রিচার্জ, বিভিন্ন বিল পরিশোধ, অনলাইন শপিং, বন্ধুদের বা প্রিয়জনদের কাছে টাকা পাঠানো ইত্যাদি।
  • ক্যাশলেস লেনদেনঃ অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা এনে লেনদেন করলে নিরাপদ। এই পদ্ধতি নগদ টাকার ব্যবহার কমাতে সাহায্য করে। যা একটি স্মার্ট এবং আধুনিক লেনদেন ব্যবস্থা।
  • একাউন্টে তাৎক্ষণিক যোগঃ সাধারণত অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার করার সাথে সাথেই বেনিফিশারির বিকাশ একাউন্টে যোগ হয়ে যায়।
  • লেনদেনের ইতিহাসঃ ডিজিটাল প্লাটফর্মে লেনদেন করার ফলে গ্রাহক তার সকল লেনদেনের একটি স্পষ্ট ইতিহাস সংরক্ষণ করতে পারে, যা প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • বিশেষ অফারঃ মাঝে মাঝে অগ্রণী ব্যাংক এবং বিকাশ যৌথভাবে এই লেনদেনের উপর বিভিন্ন অফার দিয়ে থাকে, যা গ্রাহকদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা নিয়ে আসে।
এসবের কারণের জন্য অগ্রণী ব্যাংকের গ্রাহকরা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বিকাশে টাকা আনতে আগ্রহী হন। এটি একটি সুবিধা জনক, দ্রুত এবং নিরাপদ উপায় আপনার দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করার জন্য।

বিকাশ টু অগ্রণী ব্যাংক চার্জ কত

বিকাশ টু অগ্রণী ব্যাংক চার্জ কত এটা অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্যাংক থেকে বিকাশে এবং বিকাশ থেকে ব্যাংকে টাকা লেনদেন করতে হলে এ বিষয়টি আপনার জানা অতীব প্রয়োজন। আসুন জেনে নিন বিকাশ টু অগ্রণী ব্যাংক চার্জ কত ?

বিকাশ টু অগ্রণী ব্যাংক চার্জ কত নিচে তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো-
  • বিকাশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে চার্জ প্রযোজ্য। এই চার্জের হার সাধারণত আপনি যে টাকা পাঠাচ্ছেন সেই টাকা ১%।
  • অর্থাৎ আপনি যদি বিকাশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে ১০০ টাকা পাঠান, তবে চার্জ হবে ১ টাকা। এভাবে ১ হাজার টাকা পাঠালে চার্জ হবে ১০ টাকা।
  • তবে, এই চার্জের হার পরিবর্তন হতে পারে। তাই সর্বশেষ এবং সঠিক তথ্য জানার জন্য বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে টাকা পাঠানোর আগে চার্জের বিষয়টি দেখে নিতে পারেন অথবা অগ্রণী ব্যাংক বা বিকাশের হেল্পলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হতে পারেন।

অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশ একাউন্টে বা অন্য যেকোনো অ্যাকাউন্টে আপনি তখনই টাকা পাঠাতে পারবেন যখন অগ্রণী ব্যাংকে আপনার একটি সচল একাউন্ট থাকবে। এজন্য আপনাকে সবার প্রথমে অগ্রণী ব্যাংকে একটি একাউন্ট খুলতে হবে। কিন্তু অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও তথ্যাদির প্রয়োজন হবে, যা হয়তো আপনার জানা নেই। তাই আপনার সুবিধার্থে নিচে যেসব কাগজপত্র ও তথ্য লাগবে সেগুলো তুলে ধরা হলো।

সাধারণ কাগজপত্রঃ

আবেদনকারীরঃ আবেদনকারীর যেসব কাগজপত্র লাগবে সেগুলো হলো- 
  • সঠিকভাবে পূরণকৃত একাউন্ট খোলার ফর্ম(ব্যাংকের শাখায় অথবা তাদের ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা যাবে)।
  • পরিচয়পত্রের মূলকপি ও সত্যায়িত ফটোকপি (যেমন- জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স)। জাতীয় পরিচয়পত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। 
  • ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি (সত্যায়িত)।
  • ঠিকানার প্রমাণপত্র (যেমন- বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিল অথবা স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর/ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সনদ)।
  • টিআইএন(যদি থাকে)।
নমিনীর কাগজপত্র ও তথ্যঃ নমিনের যেসব কাগজপত্র ও তথ্য লাগবে সেগুলো নিচে দেয়া হলো-
  • নমিনির এক কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি (হিসাবধারী কর্তৃক সত্যায়িতা)।
  • নমিনীর পরিচয় পত্রের ফটোকপি(যেমন-জাতীয় পরিচয় পত্র)।
  • মনে রাখবেন, একাউন্ট খোলার সময় গ্রাহকে সশরীরে ব্যাংকের শাখায় উপস্থিত থাকতে হতে পারে। ব্যাংকভেদে কিছু নিয়ম ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে সামান্য ভিন্নতা দেখা দিতে পারে। তাই অ্যাকাউন্ট খোলার আগেই ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করে জেনে নেওয়া ভালো। 
  • প্রাথমিক জমা দেওয়ার জন্য কিছু অর্থের প্রয়োজন হবে। 
সর্বশেষ তথ্যের জন্য আপনাকে নিকটস্থ অগ্রণী ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনা কি নিরাপদ

এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনা নিরাপদ কিনা। এর উত্তর হচ্ছে-জি হ্যাঁ অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনা নিরাপদ। এর বেশ কয়েকটি কারণ আছে। কারণগুলো আপনাদের জন্য নিচে তুলে ধরা হলো-
  • অগ্রণী ব্যাংক এবং বিকাশ উভয়ই নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে চলে। আপনার অর্থাৎ গ্রাহকদের লেনদেন সুরক্ষিত রাখতে তারা বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
  • বিকাশ অ্যাপে অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট যোগ করার সময় ওটিপি(ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) এর মাধ্যমে আপনার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।
  • লেনদেনের প্রতিটি ধাপে নিশ্চিতকরণ ম্যাসেজ পাঠানো হয়, যা অননুমোদিত লেনদেন রোধে সহায়ক।
  • বিকাশ অ্যাপে আপনার পিন নম্বর সুরক্ষিত থাকে এবং এটি ছাড়া কোন লেনদেন সম্পন্ন করা যায় না।
  • অগ্রণী ব্যাংক তাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত আপডেট করে থাকে।
  • তবে সতর্কতার জন্য কিছু বিষয় অবশ্যই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। সেটা হচ্ছে-আপনার বিকাশ পিন এবং অগ্রণী ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর পাসওয়ার্ড কারো সাথে শেয়ার করবেন না।
  • কোন সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক করবেন না বা কারো ওপর চলে আপনার একাউন্টের কোন তথ্য প্রদান করবেন না।
  • নিয়মিত আপনার লেনদেনের ইতিহাস চেক করুন এবং কোন অসংগতি দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংক বা বিকাশ কর্তৃপক্ষকে জানান।
  • আপনার মোবাইল ফোন এবং সিম কার্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।
সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে এবং নিজের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখলে ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনা একটি নিরাপদ প্রক্রিয়া।

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার লিমিট 

অগ্রণী ব্যাংক থেকে সরাসরি বিকাশে টাকা আনার কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই। আপনি বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনার ব্যাংক একাউন্ট থেকে বিকাশে যত খুশি তত টাকা যোগ (এ্যাড মানি) করতে পারেন। 

তবে বিকাশে টাকা যোগ করার কিছু লিমিট রয়েছেঃ
  • প্রতিদিনঃ ৪ বার টাকা আনা যাবে। 
  • প্রতিবারের সর্বোচ্চ পরিমাণঃ ২০ হাজার টাকা।
  • মাসিক সর্বোচ্চ পরিমাণঃ এর কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই।
সুতরাং আপনি দৈনিক চারটি লেনদেনে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে আনতে পারবেন। তবে, মাসের হিসেবে এর কোন ধরা বাঁধা নিয়ম নেই। উল্লেখ্য, এই প্রক্রিয়ায় টাকা আনার জন্য কোন চার্জ প্রযোজ্য নয়। 

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার অসুবিধা

অগ্রনী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার বেশ কিছু সুবিধা থাকলেও কিছু সম্ভাব্য অসুবিধা বা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেগুলোর নিচে উল্লেখ করা হলো-
  • প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও ডিভাইসঃ এই পদ্ধতিতে টাকা আনার জন্য আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের মতো ডিভাইস এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রাথমিক জ্ঞান থাকতে হবে। যারা প্রযুক্তি ব্যবহারের অভ্যস্ত নন, তাদের জন্য এই পদ্ধতিতে টাকা লেনদেন করা কিছুটা কঠিন হতে পারে।
  • ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজনীয়তাঃ অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার করার জন্য আপনার একটি স্থিতিশীল ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন। দুর্বল বা সংযোগবিহীন ইন্টারনেট থাকলে লেনদেন ব্যাহত হতে পারে।
  • লেনদেন চার্জঃ বিকাশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে সাধারণত চার্জ প্রযোজ্য হয়। যদিও অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা না খেতে সরাসরি কোন চার্জ নাও থাকতে পারে, তবে ব্যাংকের নিজস্ব কিছু সার্ভিস চার্জ থাকতে পারে। যা গ্রাহক অনেক সময় নাও জানতে পারে। এই বিষয়ে ব্যাংকের নীতি আপনার ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। ( উল্লেখ্যঃ পূর্বে বলা হয়েছে সাধারণত কোন ফি লাগেনা, তবে ব্যাংকের নিজস্ব নীতি পরিবর্তন হতে পারে)।
  • লেনদেনের সীমাঃ অগ্রণী ব্যাংক এবং বিকাশ উভয়েরই দৈনিক এবং মাসিক লেনদেনের একটি নির্দিষ্ট সীমা রয়েছে। এই সীমার বাইরে টাকা স্থানান্তর করা সম্ভব নাও হতে পারে, যা আপনার বড় অংকের লেনদেনের ক্ষেত্রে অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে।
  • বেনিফিশিয়ারি যোগ করার জটিলতাঃ প্রথমবার টাকা পাঠানোর আগে বেনি ফিসারি হিসেবে বিকাশ একাউন্ট যোগ করার প্রক্রিয়া আপনার জন্য কিছুটা জটিল হতে পারে। ভুল তথ্য দিলে বা সঠিকভাবে প্রক্রিয়া অনুসরণ না করলে বেনেফিশিয়ারি যোগ করা সকল নাও হতে পারে।
  • সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকিঃ যদিও নিরাপত্তার ব্যবস্থার জোরদার থাকে, অনলাইন লেনদেনে কিছু ঝুঁকি সবসময় বিদ্যমান থাকে। বা হ্যাকিং এর মাধ্যমে গ্রাহকের তথ্য চুরি করে আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। তাই গ্রাহকদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে।
  • কারিগরি সমস্যাঃ ব্যাংক বা বিকাশের সার্ভারে দেখা দিলে লেনদেন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকতে পারে, যা আপনার জন্য অসুবিধার কারণ হতে পারে।
  • ভুল একাউন্টে টাকা পাঠানোর ঝুঁকিঃ তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে বা ভুলক্রমে অন্য কোন বিকাশ একাউন্টে আপনার টাকা চলে গেলে তা ফেরত পাওয়া কঠিন হতে পারে।
  • অগ্রণী ব্যাংক একাউন্টের সীমাবদ্ধতাঃ যদি আপনার অগ্রণী ব্যাংক একাউন্টে কোন সমস্যা থাকে(যেমন-একাউন্ট নিষ্ক্রিয় থাকা, পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকা ইত্যাদি) তবে বিকাশে টাকা আনা সম্ভব না।
এগুলো অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার কিছু সম্ভাব্য অসুবিধা বা সীমাবদ্ধতা। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে বা সতর্ক থাকলে এই অসুবিধা গুলো আপনার এড়ানো সম্ভব।

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার ক্ষেত্রে সতর্কতা

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার সময় কিছু সতর্কতা আপনার অবশ্যই অবলম্বন করা উচিত। এ সতর্কতা গুলো আপনার আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যেকোনো প্রকার অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়াতে সাহায্য করবে। 
অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার ক্ষেত্রে সতর্কতা

নিচে আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু সতর্কতা উল্লেখ করা হলো-
  • বেনিফিশিয়ারি যোগ করার সময় সঠিক তথ্যঃ বিকাশ অ্যাকাউন্ট নাম্বার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন নাম মোবাইল নাম্বার ইত্যাদি সঠিকভাবে প্রবেশ করুন। ভুল তথ্য দিলে অন্য কারো একাউন্টে টাকা চলে যেতে পারে।
  • ওটিপি(অন টাইম পাসওয়ার্ড)ঃ বেনি ফিসারী যোগ করা বা টাকা পাঠানোর সময় আপনার রেজিস্টার মোবাইল নম্বরে আসা ওটিপি কারো সাথে শেয়ার করবেন না। ব্যাংক বা বিকাশ কখনোই ওটিপি জানতে চাইবে না।
  • শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহারঃ আপনার অগ্রণী ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং বিকাশ একাউন্টের জন্য শক্তিশালী এবং অনন্যা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।
  • সন্দেহজনক লিংক এড়িয়ে চলুনঃ কোন সন্দেহজনক ইমেল, ম্যাসেজ, বা লিংকে ক্লিক করবেন না। ফিশিং এটাকের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হতে পারে।
  • অপরিচিত ব্যক্তির অনুরোধে সাড়া দেবেন নাঃ কোন অপরিচিত ব্যক্তি যদি আপনাকে বিকাশে টাকা পাঠানোর জন্য অনুরোধ করে, তবে তার সত্যতা যাচাই না করে সাড়া দেবেন না।
  • লেনদেনের পরিমাণ যাচাই করুনঃ টাকা পাঠানোর আগে প্রেরিত অর্থের পরিমাণ ভালোভাবে দেখে নিন। ভুল পরিমাণে টাকা পাঠালে আপনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
  • লেনদেনের বিবরণ সংরক্ষণ করুনঃ সফল লেনদেনের পর প্রাপ্ত কনফার্মেশন ম্যাসেজ বা স্ক্রীনশট সংরক্ষণ করুন। ভবিষ্যতে কোন সমস্যা হলে এটি প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগবে। 
  • নিয়মিত একাউন্ট স্টেটমেন্ট চেক করুনঃ আপনার অগ্রণী ব্যাংক এবং বিকাশ একাউন্টের লেনদেনের বিবরণ নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করুন। কোনো অস্বাভাবিক লেনদেন দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংক এবং বিকাশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করুন। 
  • মোবাইল ফোন এবং সিম কার্ডঃ আপনার মোবাইল কোন এবং সিম কার্ড সুরক্ষিত রাখুন। ফোনে স্ক্রীন লক ব্যবহার করুন এবং আপনার সিম কার্ড দিয়ে অন্য কারো হাতে দেবেন না। 
  • বিকাশ অ্যাপের নিরাপত্তা সেটিংস পরীক্ষা করুনঃ বিকাশ অ্যাপের নিরাপত্তা সেটিংস যেমন-পিন পরিবর্তন, ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি অপশনগুলো ব্যবহার করে আপনার একাউন্টকে আরো সুরক্ষিত করুন। 
  • ব্যাংক বা বিকাশের হেল্পলাইন নাম্বারের ব্যবহারঃ কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা সমস্যা হলে দ্রুত অগ্রণী ব্যাংক বা বিকাশের হেল্পলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করুন।
 এই সর্তকতাগুলো অবলম্বন করে আপনি অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার প্রক্রিয়াটিকে আরো নিরাপদ করতে পারবেন। মনে রাখবেন, আপনার আর্থিক নিরাপত্তা আপনার নিজের হাতে। 

বিকাশে টাকা আনার জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনার জানা দরকার

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার প্রক্রিয়া সত্যিই অনেক সহজ ও নির্ভরযোগ্য। তবে এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করে টাকা লেনদেন করার জন্য আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই জানা প্রয়োজন। চলুন তাহলে জেনে নিন অগণের ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-
  • বিকাশ অ্যাপে অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট যোগ করতে বিকাশ ও অগ্রণী ব্যাংক একাউন্টে ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার, জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার এবং জন্ম তারিখ একই হতে হবে। অন্যথায় ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে আপনার তথ্যগুলো আপডেট করুন।
  • আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টটি সচল(ট্রাস্ট লেভেল ৩) থাকতে হবে।
  • অগ্রণী ব্যাংক একাউন্টটিও সক্রিয় থাকতে হবে এবং ব্যাংকিং নিয়ম কানুন এর মধ্যে সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয় এমন অ্যাকাউন্ট হতে হবে। 
  • অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার জন্য সাধারণত কোন ফি লাগে না।
  • লেনদেনের লিমিট অগ্রণী ব্যাংক এবং বিকাশ উভয়ের নীতি অনুযায়ী প্রযোজ্য হবে। সাধারণত, প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক বার এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত টাকা ট্রান্সফার করা যায়। 
অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার পদ্ধতিগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করে আপনার টাকা লেনদেন করুন। সেই সাথে উপরিউক্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মাথায় রেখে নিরাপত্তার সাথে ব্যাংকিং সেবা গুলো উপভোগ করুন।

লেখকের শেষ বক্তব্য

অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম অতি সহজেই শিখে নেয়া যায়। আপনি যদি এই নিয়মগুলোর প্রত্যেকটি ধাপ ভালোভাবে অনুসরণ করে অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার করেন তাহলে আপনার টাকা খুব সহজে, দ্রুত ও নিরাপদ ভাবে বিকাশ একাউন্টে জমা হয়ে যাবে। তাই আর দেরি না করে আজই অগ্রণী ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং বিকাশ অ্যাপ আপনার মোবাইলে ইন্সটল করুন এবং আপনার আর্থিক লেনদেনগুলো সফল করুন।

আশা করছি উপর আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব ভালোভাবে করেছেন। আর্টিকেলটি পড়ে নিশ্চয়ই আপনার কাঙ্খিত তথ্যগুলো পেয়েছেন। আর্টিকেলটা যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন। এরকম গুরুত্বপূর্ণ ও ইউনিট তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করুন। আর হ্যাঁ, আপনার মূল্যবান মতামত অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আপনাদের উৎসাহই আমাদের লেখা অনুপ্রেরণা যোগাবে। আপনার জন্য রইল শুভকামনা। ধন্যবাদ















এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪